বিস্ময়কর প্রযুক্তি যা লেজার ভিশন চিকিৎসায় যুক্ত করেছে এক নতুনমাত্রা

ReLEx SMILE হল তৃতীয় প্রজন্মের অত্যাধুনিক লেজার ভিশন কারেকশন যা কিনা অত্যন্ত নির্ভুল ফেমটোসেকেণ্ড (femtosecond) লেজার এর সাহায্যে করা হয়।এটাই সর্বপ্রথম ও একমাত্র ব্লেডবিহীন, ফ্ল্যাপবিহীন, ব্যথাবিহীন 3D লেজার প্রযুক্তি যা পি.আর.কে- PRK, ল্যাসিক এবং ফেমটো-ল্যাসিকের চেয়েও অধিকতর উন্নত ও সর্বাপেক্ষা নিরাপদ প্রযুক্তি। এই পদ্ধতি প্রায় ১০ বছর আগে প্রথম মানুষের চোখে প্রয়োগ করা হয় আর সেই থেকে আজ পর্যন্ত লাখো মানুষ SMILE সার্জারি করিয়ে চশমা ও কন্টাক্ট লেন্স থেকে মুক্তি পেয়েছে।
ReLEx SMILE তাদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী যাদের চোখ বেশি শুষ্ক, যাদের কন্টাক্ট লেন্সে এলার্জি আছে এবং যারা খেলাধুলার সাথে জড়িত।

ReLEx SMILE আমেরিকার FDA কতৃক অনুমোদিত এবং বিশ্বজুড়ে ৬৫টি দেশে ৭০০ ক্লিনিকের ১৩০০ সার্জন এপর্যন্ত প্রায় দশ লক্ষ চোখে সফলভাবে SMILE সার্জারি সম্পন্ন করেছেন।

পি.আর.কে - প্রথম প্রজন্মের লেজার ভিসন কারেকশন হল পি.আর.কে- PRK Photorefractive Keratectomy যেখানে কর্নিয়ার উপরিভাগে সরাসরি এক্সাইমার লেজার প্রয়োগ করে চশমার পাওয়ার কারেকশন করা হয়।

ল্যাসিক- LASIK এবং ফেমটো-ল্যাসিক- Femto-LASIK হল দ্বিতীয় প্রজন্মের লেজার ভিসন কারেকশন প্রযুক্তি যেখানে অপারেশনের শুরুতে ব্লেড বা ফেমটোসেকেন্ড লেজারের সাহায্যে চোখের কর্নিয়ার উপরিভাগে পাতলা একটি আবরন তৈরি করা হয় এবং সেটি একপাশে সরিয়ে রেখে এক্সাইমার লেজারের সাহায্যে চশমার পাওয়ার কারেকশন করার পর সেই সরিয়ে রাখা আবরনটি পুনরায় লাগিয়ে দেয়া হয়।পিআরকে’র তুলনায় দ্রুত দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক হওয়ায় ল্যাসিক এবং ফেমটো-ল্যাসিক বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি।


ReLEx SMILE এর তিনটি ধাপঃ
SMILE পদ্ধতি কেন বেছে নেবেন?
এই সর্বাধুনিক পদ্ধতিটি রিফ্র্যাক্টিভ সার্জারির জগতে এক বিশাল পরিবর্তন এনেছে এবং একে বলা হচ্ছে ফ্ল্যাপবিহীন ল্যাসিক ও ব্যাথামুক্ত পি.আর.কে.।
ফ্ল্যাপবিহীনঃ

ReLEx SMILE-ই প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ফ্লেমটোসেকেণ্ড লেজার প্রযুক্তি যার সাহায্যে ফ্ল্যাপবিহীন লেজার ভিশন কারেকশন সম্ভব। চশমার পাওয়ার অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত পরিমাপ অনুসারে ফেমটোসেকেন্ড লেজারের সাহায্যে লেজারের সাহয্যে একটি লেন্টিকিউল তৈরি করা হয় যা পরবর্তীতে একটি সুক্ষ ছিদ্রের মধ্য দিয়ে বের করা আনার ফলে চশমার পাওয়ার কারেকশন সম্পন্ন হয়। আর পুরো প্রক্রিয়াটা চোখের কর্নিয়ায় কোন প্রকার ফ্ল্যাপ করা ছাড়াই করা হয় যার জন্য একে ফ্ল্যাপবিহীন লেজার ভিশন কারেকশন বলা হয়।
ব্যথাবিহীনঃ

সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ফেমটোসেকেন্ড লেজারের সাহয্যে করা হয় যেখানে অপারেশনের শুরুতে চোখের কর্নিয়াতে একটি অত্যন্ত নমনীয় ট্রিটমেন্ট প্যাক ব্যবহৃত হয়।সাকশনের সময় স্বল্পচাপ অনুভূত হয় যা অত্যন্ত রোগী বান্ধব ও আরামদায়ক। শুধুমাত্র লেজার প্রক্রিয়া চলাকালীনই সাকশন প্রয়োগ করা হয় যার ফলে রোগী কোনরকম ব্যথা অনুভব করে না।
সম্পূর্ণ ফেমটোসেকেন্ড প্রযুক্তিঃ

ReLEx SMILE লেজার পদ্ধতিটি সম্পূর্ণভাবে ফেমটোসেকেন্ড লেজার প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতি যাতে কোন রকম জটিল ক্যালকুলেশন বা ফ্লুয়েন্স টেস্টের প্রয়োজন পড়ে না। ফেমটোসেকেন্ড লেজার প্রতিটি পাওয়ার কারেকশনই অত্যন্ত সুক্ষ ও নির্ভুল ভাবে সুসম্পন্ন করে থাকে।
মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভঃ

এটি কর্নিয়ার উপরিভাগে কোন রকম পরিবর্তন করা ছাড়াই পাওয়ার কারেকশন সম্পন্ন করে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় কর্নিয়াতে খুবই ছোট (২-৪মি.মি.) একটি ছিদ্র করা হয়। যেখানে ফ্লেমটো-ল্যাসিক ও ল্যাসিকেরক্ষেত্রে কর্নিয়ার উপরিভাগে ৮০% জায়গা ব্লেড বা লেজারের সাহয্যে তুলে রাখা হয় সেখানে ReLEx SMILEএ মাত্র ২০% জায়গায় খুবই ছোট একটি ছিদ্র করা হয় যার ফলে কর্নিয়া খুব দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সাহায্য করে।

শুষ্ক চোখ বা পাওয়ার ফিরে আসার সম্ভাবনা কমঃ

ল্যাসিক সার্জারির তুলনায় SMILE সার্জারি প্রক্রিয়ায় কর্নিয়ার উপরিভাগের নার্ভগুলো থাকে নিরাপদ। যেহেতু কর্নিয়াতে কোন ফ্ল্যাপ তৈরি করা হয়না সেহেতু এখানে কর্নিয়ার উপরিভাগের নার্ভ থাকে অক্ষত যার ফলে চোখের স্বাভাবিক পানি তৈরি ব্যহত হয় না ; আর এতে করে সার্জারির পর চোখে শুষ্কভাব অনুভুতি বা অন্যান্য অসুবিধা বোধের সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। SMILE অনেক বেশি স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যার ফলে চশমার পাওয়ার ফিরে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বায়োম্যাকানিকাল শক্তি থাকে অটুটঃ

কর্নিয়ার উপরিভাগ অক্ষত থাকে বিধায় কর্নিয়ার সুস্থতা নিশ্চিত করে এবং বায়োম্যাকানিকাল শক্তি ও দৃঢ়তা অটুট থাকে।
দ্রুত, সহজ ও স্বল্পপরিচর্যাঃ

ReLEx SMILE সার্জারির পুরো প্রক্রিয়াটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়, যেখানে মূল লেজার সময় ২০-৩০ সেকেণ্ড। যেহেতু পুরো প্রক্রিয়াটিতে কোন প্রকার ফ্ল্যাপ করা হয় না এবং সম্পূর্ণভাবে ফেমটোসেকেন্ড লেজার প্রযুক্তির সাহায্যে করা হয় তাই সার্জারি পরবর্তী বিশেষ যত্নের প্রয়োজনও কম; দৃষ্টি ফিরে পেতে তাই স্বভাবতই সময় কম লাগে। রোগীরা খুব অল্প সময় পর থেকেই স্বাভাবিক কাজকর্ম, গোসল করা, মেক আপ করার মতো কাজগুলো শুরু করতে পারেন। কয়েকদিন পর থেকে ড্রাইভিং এবং খেলাধুলা করতেও পারেন। যেহেতু ReLEx SMILEএ কর্নিয়ায় কোন ফ্ল্যাপ করা হয় না তাই খেলাধুলার ক্ষেত্রে ফ্ল্যাপ সরে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে না।
সিঙ্গেল স্টেপ পদ্ধতিঃ

ReLEx SMILE পদ্ধতিটি সম্পন্ন হয়-

- একটি লেজারের সাহায্যে
- একটি চিকিৎসা পরিকল্পনা অনুসারে
- শুধুমাত্র একটি লেজার প্রক্রিয়াতে এবং
- রোগীকে এক মেশিন থেকে অন্য মেশিনে স্থানান্তরের প্রয়োজনও পড়ে না

এ সব কারণেই এই পদ্ধতিকে বলা হয় সিঙ্গেল স্টেপ পদ্ধতি।

অন্যান্য সুবিধাসমূহঃ

• পাইলট, বিভিন্ন সেনাদল সদস্য, উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সদস্য এবং সেইসব ক্রীড়াবিদ যাদের ক্রীড়াক্ষেত্রে সুক্ষ দৃষ্টি প্রয়োজন তাদের জন্য এই চিকিৎসা-পদ্ধতি খুবই উপযোগী।
• ReLEx SMILE শব্দহীন ও গন্ধহীন, লেজার কাজ করে নিঃশব্দে।
আপনি কি ল্যাসিক করানোর জন্য উপযুক্ত নন? তাহলে SMILE আপনারই জন্য।
যে সকল কারনসমূহের জন্য ল্যাসিক করা সম্ভব হয় নাঃ
  • অসমতল বা পাতলা কর্নিয়া
  • চোখের শুষ্কতাজনিত সমস্যা
  • যে সকল ঝুঁকিপূর্ণ পেশা বা খেলাধুলায় স্বাভাবিক দৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ
উপরোক্ত কারণ সমুহের জন্য যারা ল্যাসিক সার্জারীর জন্য বিবেচিত হননি তাদের জন্য SMILE অবশ্যই একটি যথাযথ এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি।

SMILE সার্জারি কারা করতে পারবে?

নিম্নলিখিতক্ষেত্রে SMILE সার্জারি বিবেচনা করা হয়ঃ

• যাঁদের বয়স ১৮ বছরের ওপর;
• যাঁদের চশমার পাওয়ার -০.৫০ বা -১০.০০এর মধ্যে;
• যাঁদের চোখের রেটিনা, কর্নিয়ায় সমস্যা বা অন্য কোন অসুখ নেই
• গত ১ বছরের মধ্যে চশমার পাওয়ার বাড়েনি;
• অন্তঃসত্ত্বা নয় (মহিলাদের জন্য) ;
• যাঁরা চশমা বা কন্ট্যাক্ট লেন্স পরতে চান না;
• যাঁরা SMILE সার্জারি চলাকালীন সময়ে একটি সবুজ আলোর দিকে সরাসরি তাকিয়ে থাকতে পারবেন।

রিলেক্স স্মাইলের সাহয্যে নিম্নলিখিত পাওয়ার কারেকশন করা সম্ববঃ
নিকটদৃষ্টিবদ্ধ চোখ বা মায়োপিয়া
-০.৫০ থকে -১০.০০ ডায়পটারস
বিষমদৃষ্টিবদ্ধ চোখ বা এস্টিগম্যাটিজম
-১.০০ থকে -৫.০০ ডায়পটারস
প্রস্তুতি এবং সার্জারি পূর্ববর্তী কাউনসেলিং

অপারেশনের পূর্বে আপনি SMILE করানোর জন্য উপযুক্ত কিনা সেটি নিশ্চিত করার জন্য চোখের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ত্রুটিবিচ্যুতি নির্ণয়ে বিশেষ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা টেস্ট করা হয়। এই টেস্ট রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেন রোগীর চোখে SMILE করা যাবে কিনা অথবা SMILE করা গেলেও কতটুকু পাওয়ার কারেকশন করা যাবে।

SMILE সার্জারিরক্ষেত্রে চশমার পাওয়ার, কর্নিয়ার পূরুত্ব, কর্নিয়ার ধরনসহ আরও নানাবিধ বিষয় মূখ্য ভূমিকা পালন করে। টেস্টপরবর্তীকালে ডাক্তারের সাথে আলোচনায় উপোরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও রোগীর পেশা ও শখের বিষয়গুলো বিবেচনা করে একজন সার্জন তাঁর রোগীর পাওয়ার কারেকশনের সিধান্ত নিয়ে থাকেন। ডাক্তারের সাথে আলোচনার সময় আপনার পূর্ববর্তী চশমার প্রেসক্রিপশনগুলো সাথে রাখা জরুরী।

টেস্ট এবং টেস্ট পরবর্তীকালে নিম্নলিখিত পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করা হয়ে থাকে

  • রোগীর চোখে একটি ড্রপ দিয়ে চোখের মণি বড় করে চোখ পরীক্ষা করা হয় যাতে রেটিনার স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা হয় এবং সেই সাথে চশমার পাওয়ার পরীক্ষা করা হয়।
  • চোখের চাপ বা প্রেশার (গ্লকোমা) আছে কিন সেটি নিশ্চিত করা হয়।
  • এছাড়াও রোগীর চোখের কর্নিয়ার আকার পরিমাপ করা হয় এবং কেরাটোকোনাস (কর্নিয়ার একপ্রকার অসুখ) আছে কিনা বা ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা সেটাই যাচাই করা হয়।

  • রোগীর চোখের কর্নিয়ার পূরুত্ব মাপা হয় যার ভিত্তিতে চশমার পাওয়ার কারেকশনের মাত্রা নির্ধারিত হয়।


আপনি যদি কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারী হন তবে টেস্টের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।

টেস্ট পরবর্তীতে যদি এটা প্রতীয়মান হয়, যে আপনি ReLEx SMILE সার্জারির জন্য উপযুক্ত নন তাহলেঃ:

• আপনার ডাক্তার আপনাকে বিষদভাবে জানাবেন কেন আপনি যোগ্য নন
• আপনি তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে আপনি অন্য কোন রিফ্র্যাক্টিভ সার্জারি করাতে চান, না কি আপনার চশমা বা লেন্সের ব্যবহার চালিয়ে যাবেন।
কিভাবে আপনি সার্জারির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবেন?
যদি আপনি কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারী হন, তাহলে বেশির ভাগ সার্জনই আপনাকে সার্জারির আগের কয়েক সপ্তাহ লেন্সের পরিবর্তে চশমা পড়তে বলবেন। সার্জারির নির্ধারিত দিনে কোন প্রকার মেক আপ, লোশন বা সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না। আপনার সাথে অবশ্যই আরো একজনকে সাথে আনতে হবে যিনি সার্জারির পর আপনাকে বাড়ি নিয়ে যাবেন।

সম্মতিপত্র:
সার্জারি সম্পর্কিত সব রকম সুবিধা, বিকল্প পদ্ধতি ও সম্ভাব্য জটিলতা সম্পর্কে অবহিত করার পর আপনাকে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হবে।
SMILE সার্জারি কিভাবে করা হয়?
প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া সমূহঃ
  • অপারেশনের আগে চোখে যে এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে বলা হয় তা অপারেশনের আগেরদিন থেকে ৬ঘন্টা অন্তর দৈনিক ৪ বার ব্যবহার করতে হবে।
  • অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার পর আপনাকে লেজার মেশিনের বেডে শুয়ে পড়তে বলা হবে।
  • অনুভূতিনাশক আইড্রপ আপনার চোখে দেওয়া হবে।
  • চোখের পলক যেন না পড়ে সে জন্য একটি আইলিড হোল্ডার ব্যবহার করা হবে।
  • যে চোখটি সার্জারি করা হবে না সেটি একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে।
  • এরপর আপনাকে একটি সবুজ আলোর দিকে তাকাতে বলা হবে এবং এসময় ধীরে ধীরে আলোটি আপনার চোখের কাছে চলে আসবে আর আপনাকে একদৃষ্টিতে সেই আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে বলা হবে।
  • সার্জারির শুরুতে লেজার সিস্টেমে একটি ওয়ানটাইম ডিসপোসিবল ট্রিটমেন্ট প্যাক ব্যবহার ব্যবহার করা হয় যা একপর্যায়ে হালকাভাবে আপনার কর্নিয়ায় স্পর্শ করবে আর এসময় সেই সবুজ বাতিটি কিছু সময়ের জন্য একটু ঘোলাটে দেখাবে।
  • • আপনার ডাক্তার আপনাকে প্রতি মুহূর্তে নির্দেশনা দিয়ে যাবেন। এই সময়ে আপনি লেজার মেশিনের একটি স্বয়ংক্রিয় নির্দেশনাও শুনতে পাবেন। আপনাকে এই সময়টাতে পুরোপুরি শান্ত থাকতে হবে কারণ আসল লেজার সার্জারী তখন থেকেই শুরু হবে।
লেন্টিকিউল তৈরি করাঃ
  • ফেমটোসেকেণ্ড লেজারটি এবার আপনার চোখের উপরপৃষ্ঠের নিচে আপনার চশমার পাওয়ার অনুযায়ী কন্ট্যাক্ট লেন্স আকারের একটি লেন্টিকিউল তৈরি করবে এবং এরপর কর্নিয়ায় উপরিভাগে একটি অতি ক্ষূদ্র ছিদ্র তৈরি করবে।
  • লেজার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে প্রায় ৩০ থেকে ৬০ সেকেণ্ড সময় লাগে। (লেন্টিকিউলঃ এটি কন্ট্যাক্ট লেন্স আকারের একটি অতি ক্ষূদ্র টিস্যু যা SMILE সার্জারির সময় সরিয়ে নেওয়া হয় যার ফলে চশমার পাওয়ার কারেকশন সম্পন্ন করা হয়।)

লেন্টিকিউল অপসারণঃ -

  • যখনই লেজারের মাধ্যমে লেন্টিকিউল তৈরি হয়ে যায়, তখন সার্জন সার্জিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টের সাহায্যে সেই লেন্টিকিউলটী বের করে আনেন। এই পর্যায়ে আপনি কিছুটা অনুভূতিপ্রবন হতে পারেন কিন্তু আপনি কোন ব্যাথা অনুভব করবেন না অনুভূতিনাশকের উপস্থিতির কারণে।
  • লেন্টিকিউল বের করে আনাসহ পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে

চশমার পাওয়ার কারেকশন - লেন্টিকিউল অপসারণের মাধ্যমে কর্নিয়ার আকারও পরিবর্তিত হয়, যার ফলে চশমার পাওয়ার কারেকশন সম্পন্ন হয়

সার্জারির পরবর্তী ধাপসমূহ
  • সার্জারীর পরপর আপনার চোখে আইড্রপ দেওয়া হবে
  • এরপর নার্স আপনাকে বিশ্রাম করার জন্য একটি বিশ্রাম কক্ষে নিয়ে যাবেন
  • এরপর সার্জন আপনার চোখ স্লিট ল্যাম্প দিয়ে পরীক্ষা করে দেখবেন
  • আপনার ওষুধ গুলো ঠিকমতো বুঝিয়ে দিয়ে আপনাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে
  • আপনার চোখে সামান্য অস্বস্তিবোধ হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে আপনার ডাক্তার আপনাকে ব্যাথানাশক ওষুধ দিতে পারেন
  • সার্জারীর পর আপনি কিছুটা আলোক সংবেদনশীল হতে পারেন এবং সরাসরি আলোর দিকে তাকাতে প্রথম প্রথম সমস্যা হতে পারে।এজন্য বাইরে ক’দিন সানগ্লাস ব্যবহার করা ভাল, কিন্তু বাসায় থাকলে তার প্রয়োজন নেই। অনেক সময় চোখে কিছু বিঁধেছে মনে হতে পারে, তবে কোন অবস্থাতেই চোখ কচলানো যাবে না।
  • দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার চোখ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে
  • সব ওষুধ ও আইড্রপগুলো সময় ও নিয়ম-মেনে ব্যবহার করা চোখের দ্রুত সেরে উঠতে খুবই জরুরী।
  • আমরা আমাদের রোগীদেরকে সার্জারি পরবর্তী এক বা দুইদিন বাড়িতেই থাকতে বলি, না হলে চোখে ধুলাবালি চলে যেতে পারে। এছাড়া দৈনন্দিন কাজ যেমন লেখাপড়া, টিভি দেখা, কম্পিউটারে কাজ করা এসব কাজ সার্জারির পরদিন থেকেই করা যায়।
  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা সার্জারির পরদিন থেকেই স্বাভাবিক কাজে ফিরে যেতে পারেন


অপারেশনের পরদিন অবশ্যই ডাক্তারের কাছে ফলো-আপের জন্য আসতে হবে। পরবর্তী ফলো-আপগুলো সপ্তাহে বা মাসে হতে পারে। তবে এই ফলো-আপগুলো নিয়ম মেনে রক্ষা করা আপনার চোখের দ্রুত সেরে ওঠার জন্য সহায়ক।

সম্ভাব্য জটিলতাসমূহঃ
একজন রোগী নিম্নবর্ণিত জটিলতাগুলোর মুখোমুখি হতে পারেন অপারেশন ও অপারেশন পরবর্তী সময়ে-
  • আপারেশন চলাকালিন সময় ১০০০ জনের মধ্যে ২/১ জনের সাকশনের লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা হতে পারে আর সেক্ষেত্রে ঝুঁকি না নিয়ে সার্জন পুরো প্রক্রিয়াটিই বন্ধ করে দিতে পারেন। সার্জন পরবর্তীতে নতুন সময়ে অপারেশন করাতে পারেন অথবা রোগী ফেমটো-ল্যাসিক বা পি.আর.কে করিয়ে নিতে পারেন
  • এছড়াও SMILE সার্জারির মাধ্যমে যখন লেন্টিকিউল সম্পূর্ণ অপসারণ করা যায় না তখন সার্জন সাধারণ ল্যাসিক অপারেশন বিবেচনায় রাখেন।
যদি সার্জারির পর রোগী তার লক্ষ অনুযায়ী চোখের রিফ্র্যাকশন না পান, সেক্ষেত্রে উপায় হলো পি.আর.কে. অথবা থিন-ফ্ল্যাপ ল্যাসিক।

করণীয়-
  • অপারেশন শেষে বাড়ি ফেরার সময় অবশ্যই সাথে একজন সঙ্গী থাকা
  • বাড়ি ফিরে কয়েকঘন্টা ঘুমানো ভালো, কেননা এ সময় চোখের বিশ্রাম খুবই জরুরী
  • ডাক্তারের পরামর্শ সঠিক ভাবে সাবধানে অনুসরণ করা
বর্জনীয়-
  • ধুলাবালি বেশি এমন জায়গাগুলোতে কিছু দিন যাওয়া
  • ডাক্তার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত গরম পানিতে গোসল বা সাঁতারকাটা
  • চোখ কচলানো বা চুলকানো
  • ২-১ সপ্তাহ মেক আপ ব্যবহার করা