লেজার ভিশন কারেকশনের ক্ষেত্রে মনোভিশন কারেকশন চল্লিশোর্ধ রোগীদের জন্য একটি উপযোগী সমাধান।

প্রেসবায়োপিয়া (Presbyopia) কি?
যারা সারাজীবন চশমা পরেননি বা খুব কম পাওয়ারের প্লাস বা মাইনাস চশমা পরেছেন তাঁদের চল্লিশের কাছাকাছি এলে বা চল্লিশের একটু পরে (যাঁরা মাইনাস পাওয়ার পরেন) দুই পাওয়ারের চশমা লাগে যার জন্য আলাদা পড়বার চশমা বা বাইফোকাল বা প্রগ্রেসিভ লেন্স ব্যবহার করতে হয়। কারণ বয়সের সাথে সাথে আমাদের চোখের নিকটে ফোকাস করার শক্তি ধীরে ধীরে কমে আসে –এই সমস্যাকেই প্রেসবায়োপিয়া বলে।এটি একটি প্রাকৃতিক নিয়ম, কোন অসুখ থেকে এটা হয় না।


মনোভিশন কারেকশন কি?
আজকাল চল্লিশোর্ধ মানুষেরা অনেকাংশেই লেজার সার্জারির দিকে ঝুঁকছেন প্রেসবায়োপিয়াজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে। এ সার্জারিতে রোগীর এক চোখের দূরের দৃষ্টি ও অন্য চোখের কাছের দৃষ্টি ত্রুটি সংশোধন করা হয় বলে একে মনোভিশন কারেকশন বলা হয়।এটি কিছু বিশেষ রোগীদের জন্যও সবচেয়ে ভালো পন্থা।


মনোভিশন ল্যাসিক কিভাবে কাজ করে?
প্রথমে জানতে হবে যে বর্তমানের ল্যাসিক মেশিনে মাত্র একটাই পাওয়ার correction করতে পারে, হয় দূরে নয় নিকটে। একই চোখে দূরে এবং নিকটে power দেওয়া সম্ভব নয়। তাই দুই চোখের একটাতে দূরে বেশী ভাল আরেকটাতে নিকটে বেশী ভাল এইভাবে দুই চোখে একটা balance করে দিলে রোগী খুবই খুশী হয়, বিশেষ করে যাঁরা দূরে এবং নিকটে দুই দূরত্বের জন্য চশমার উপর নির্ভরশীল – মানে সব সময়ই চশমা পরতে হয় এবং এঁদের অনেকেরই চল্লিশের আগে চশমা একেবারেই ছিল না। এই গ্রুপের রোগীরা এই balancing বা Monovision ল্যাসিক করিয়ে অত্যন্ত খুশী – তাঁদের জীবনের ধারা একেবারেই পাল্টে যায়। তাঁদেরকে একটা খুব কম পাওয়ারের চশমা রাখতে বলা হয়, প্রয়োজনে মানে অনেক্ষন যদি চোখের কাজ করতে হয় তাহলে দুই চোখে একসাথে ভাল দেখার জন্য পরতে বলা হয় এবং এতে কেউই অসুবিধা বোধ করেন না।

যাঁদের শুধু নিকটে চশমা লাগে দূরে একেবারেই নেই তাঁদের জন্যও Monovision Lasik করা যায় তবে পঁয়তাল্লিশের পরে করানোই শ্রেয়। কারণ চল্লিশের পরপরই নিকটের পাওয়ার বেশী বাড়ে।


মনোভিশন একটি কার্যকরী উপায়।
চল্লিশ থেকে ষাটোর্ধ রোগীদের জন্য লেজার সার্জারি অধিক নিরাপদ ও কার্যকর। এই বয়সের রোগীদের সার্জারির পূর্বে অবশ্যই লেজার সার্জনদের সাথে নিজেদের পেশা, শখ জীবনযাপন ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ আলোচনা করে নেয়া উচিত যাতে করে মনোভিশন কারেকশনের ব্যপারে সার্জনের সিধান্ত নিতে সুবিধা হয়।


মনোভিশন সার্জারি থেকে পুনরায় রোগীকে আগের অবস্থায় ফেরত আনা সম্ভব-
মনোভিশন কারেকশনের একটি সুবিধাজনক দিক হচ্ছে রোগী যদি এতে আরাম ও সবাচ্ছন্দবোধ না করেন তাহলে পুনরায় সার্জারির মাধ্যমে তাঁর পুরো পাওয়ার কারেকশন করা সম্ভব এবং আমাদের সেন্টারে সেটা ফ্রি,যদি এক বছরের মধ্যে হয়।

আপনার বয়স যদি চল্লিশ বা তার কাছাকাছি হয় এবং দূরে দেখে কোন সমস্যা না, শুধু কাছের জিনিস দেখতে বা পড়তে অসুবিধা হয় তাহলে মনোভিশ্ন কারেকশন আপনার জন্য নয়। কারন এই সময় আপনার চশমার পাওয়ার খুব দ্রুত এবং বারবার বাড়তে ও কমতে পারে তাই আপনাকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে বিভিন্ন সামজিক অনুষ্ঠানাদিতে আপনি চাইলে এক চোখে নিকটে দেখার জন্য চশমার পরিবর্তে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারেন।